বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫
spot_img
Homeসর্বশেষঅধিকাংশ গণমাধ্যম দলীয় ও কর্পোরেট স্বার্থে কাজ করছে: হাসনাত আবদুল্লাহ

অধিকাংশ গণমাধ্যম দলীয় ও কর্পোরেট স্বার্থে কাজ করছে: হাসনাত আবদুল্লাহ


জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেছেন, দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম এখন নিরপেক্ষ অবস্থান হারিয়ে বিশেষ রাজনৈতিক দল, কর্পোরেট গ্রুপ বা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হাসনাত লেখেন, “গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। পেশাদারিত্ব ও দায়বদ্ধতার সাথে তথ্য পরিবেশনই জনগণের প্রত্যাশা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে চটকদার শিরোনাম, ক্লিকবেট কনটেন্ট এবং চরিত্রহননের খবরের আধিক্যই সংবাদমাধ্যমের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, বিশেষ করে তরুণ নারী রাজনীতিকদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপমান করার প্রবণতা বেড়েছে, যা তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমকে সংকুচিত করছে।

তার মতে, অনেক গণমাধ্যমে গঠনমূলক বক্তব্য উপেক্ষা করে রাজনৈতিক নেতাদের একটি শব্দ বা বাক্যকে অতিরঞ্জিত করে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। এতে রাজনৈতিক সৌহার্দ্য নষ্ট হচ্ছে এবং পরিবেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

হাসনাত বলেন, “ডিজিএফআই-এর সরবরাহকৃত তথ্যের ভিত্তিতে একাংশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত প্রচার, গোপন ভিডিও ব্যবহার করে চরিত্রহনন, কিংবা ব্যক্তিগত ঘটনা বিকৃত করে উপস্থাপন এখন নিত্য ঘটনা। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীনদের প্রতি অন্ধ আনুগত্য ও প্রশংসা প্রদর্শনের প্রবণতাও দৃশ্যমান, যা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।”

তিনি জানান, কাঠামোগত সংকট ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশের কারণে সাংবাদিকরা চাপে থাকেন। দেশে টেলিভিশনের জন্য আলাদা কোনো আইন না থাকায় সরকার চাইলে যেকোনো সময় সম্প্রচার বন্ধ করে দিতে পারে। অনলাইন ও টিভি সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত বেতন কাঠামো নেই ঢাকায় অনেকেই মাসে ৮–১০ হাজার টাকা বেতন পান, আবার অনেক মফস্বল সাংবাদিক কোনো বেতনই পান না। কোথাও কোথাও আইডি কার্ড পেতেও টাকা গুনতে হয়।

২০১৩ সালের অষ্টম ওয়েজবোর্ডের বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক না হওয়ায় মালিকপক্ষ তা মানছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানে কয়েক মাসের বেতন বকেয়া থাকা বা বিনা নোটিশে ছাঁটাই হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সাংবাদিকদের ওপর হামলা বা হত্যার বিচার না হওয়ায় পেশাটি ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে।

সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে তিনি রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তার দাবি, ডিজিএফআই-এর নির্দেশ অমান্য করলে বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যায়, মালিকদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় এবং নানা ধরনের হয়রানি সহ্য করতে হয়। ফলে মালিকপক্ষ ক্ষমতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থাকতে বাধ্য হয় এবং সাংবাদিকদের দিয়ে সরাসরি রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করানো হয়।

কর্পোরেট প্রভাবের দিকেও ইঙ্গিত করে হাসনাত বলেন, কিছু প্রভাবশালী গ্রুপের ‘মিডিয়া সন্ত্রাস’ অনেককে আত্মসমর্পণে বাধ্য করছে। তার মতে, “যে গণমাধ্যম জনগণের আস্থা হারায়, তার পতন শুধু সময়ের ব্যাপার।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments