সম্প্রতি শেয়ারবাজারে আবারও গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছু গুজব সিন্ডিকেট বিভিন্ন শেয়ার নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করছে, যার ফাঁদে ছোট ও নতুন বিনিয়োগকারীরা পড়ছেন। অতীতে এ ধরনের ফাঁদে পা দিয়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা অতিমূল্যের শেয়ার কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন গ্রুপে বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। এর ফলে স্বল্পমূলধনী ও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ছে।
অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বেড়ে যাওয়া কিছু কোম্পানি:
- ইউনিয়ন ক্যাপিটাল
- ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক
- এইচ আর টেক্সটাইল
- এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন
- প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড
- রিজেন্ট টেক্সটাইল
- তুং হাই নিটিং
- ফারইস্ট ফাইন্যান্স
- বে-লিজিং
- নুরানি ডাইং
- বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স
- অ্যাপোলো ইস্পাত
- সিএন টেক্সটাইল
- রিং সাইন
- ফিনিক্স ফাইন্যান্স
- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং
- ফ্যামিলি টেক্সটাইল
বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল; কিছু প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন লোকসান বা বন্ধ থাকলেও হঠাৎ শেয়ার মূল্যে উত্থান দেখা যাচ্ছে। প্রতারকরা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া সংবাদ, মিথ্যা কোম্পানি বিশ্লেষণ ও কৃত্রিম আর্থিক পূর্বাভাস তৈরি করছেন।
গুজব সিন্ডিকেটরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, মেসেঞ্জার গ্রুপ এবং ইউটিউব ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করছে যে, কোনো কোম্পানির শেয়ার শিগগিরই বাড়বে। ডিপফেক ভিডিও ও এডিট করা রিপোর্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করা হচ্ছে।
ডিএসই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্তের জন্য নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তবে একবার দাম বেড়ে গেলে বিনিয়োগকারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন এবং সিন্ডিকেটরা সহজে লাভ তুলে নেয়।
ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুর রহমান বলেন, “প্রথমে তারা বিনিয়োগকারীদের অল্প টাকার বিনিয়োগে মুনাফা দেখায়। ধীরে ধীরে টাকা বৃদ্ধি পায় এবং শেষে মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দিয়ে প্রতারণা সম্পন্ন হয়।”
বিশেষ সতর্কবার্তা:
- বিনিয়োগকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের খবর এবং অনলাইন বার্তায় ভুয়া তথ্যের ফাঁদে না পড়ার জন্য সতর্ক থাকবেন।
- আর্থিক ভিত্তি দুর্বল কোম্পানির শেয়ার কেনা ঝুঁকিপূর্ণ।
- বিএসইসি ও ডিএসই বিনিয়োগকারীদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে।



