জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের অবকাঠামোগত সৌন্দর্য ও সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অন্তর্গত প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন (ডিপিপি) করেছে, যার জন্য সরকার ১৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন শেষে আগামী নভেম্বর থেকে কাজ শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় মসজিদের পূর্ব ও উত্তর দিকে ৪৮ ফুট ও ৮০ ফুট উচ্চতার গেট নির্মাণ করা হবে। পূর্ব-উত্তর দিকে ১৬৪ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট একটি মিনার নির্মাণ করা হবে, আর দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের মিনার সংস্কার করা হবে। মসজিদের পূর্বদিকে তিনতলা বিশিষ্ট আধুনিক অডিটোরিয়াম ভবন নির্মাণ করা হবে, পশ্চিমে ২০ ফুট ও উত্তরে ৩৩ ফুট ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে। মহিলা নামাজ কক্ষ, টয়লেট ও অজুখানার সংস্কারও করা হবে।
বর্তমানে মসজিদের পূর্ব চত্বরে ফ্যান সমস্যা ও অন্যান্য দুর্ভোগ রয়েছে। নতুন প্রকল্পে এসব জায়গা সংস্কারসহ ভেতরে কেন্দ্রীয় শীতাতপ যন্ত্র (ভিআরএফ) স্থাপন করা হবে। এছাড়া সাউন্ড সিস্টেম উন্নয়ন, আলোকসজ্জা, চলন্ত সিঁড়ি (এসকেলেটর) সংযোজন এবং পূর্ব ও দক্ষিণ পার্কিংয়ের সংস্কারসহ আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করার জন্য সব প্রয়োজনীয় কাজ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
২৩ জুলাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের সভায় উন্নয়ন প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। একক উৎসভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইআইএফসি কর্তৃক সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ব্যয় এক কোটি ১৫ লাখ টাকা অনুমোদন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক মো. বজলুর রশীদ জানান, নভেম্বর থেকে কাজ শুরু হবে এবং ২০২৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্তির লক্ষ্য রাখা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর মসজিদে বর্তমানে ৩০ হাজার মুসল্লির পাশাপাশি আরও ১০ হাজার মুসল্লির নামাজের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদ রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত। ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ আইয়ুব খানের উদ্যোগে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। স্থপতি আবুল হোসেন থারিয়ানী মসজিদটির নকশা করেছেন। আল্লাহর ৯৯ নামের সঙ্গে মিল রেখে ৯৯ ফুট উঁচু, সাততলা বিশিষ্ট মসজিদে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এটি ধারণক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম মসজিদ। প্রথম নামাজ ২৫ জানুয়ারি ১৯৬৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২০০৮ সালে সৌদি সরকারের অর্থায়নে সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করছে।
এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জুরি বোর্ড নির্বাচিত নকশা অনুমোদন করেছে। আগামী মাস থেকে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।



