ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ – পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরিতে বৈষম্য, হয়রানি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণছুটি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-দপ্তর সম্পাদক অঞ্জু রানী মালাকার।
আন্দোলনের কারণ
অঞ্জু রানী মালাকার অভিযোগ করেন,
“একাধিকবার সরকারের পক্ষ থেকে কমিটি গঠনসহ সংকট সমাধানে বিভিন্ন আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে, কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। উপরন্তু আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, বদলি, বরখাস্তসহ হয়রানিমূলক পদক্ষেপ চালানো হচ্ছে, যা আমাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।”
এ সময় কর্মকর্তারা অনুরোধ করেন, অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত বা বরখাস্ত করা কর্মীদের বরখাস্তাদেশ বাতিল এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
চার দফা দাবি
১. আরইবি-পিবিএস একীভূতকরণ ও নিয়মিতকরণ
- আরইবি-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো কোম্পানি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা।
- চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী (মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক, বিলিং সহকারী) কর্মীদের নিয়মিত করা।
- মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল করা এবং অন্যায়ভাবে বদলি বা বরখাস্ত করা কর্মীদের পদায়ন বাস্তবায়ন করা।
২. হয়রানিমূলক পদক্ষেপ প্রত্যাহার
- ১৭ আগস্ট, ২০২৫ থেকে যেসব কর্মকর্তা-বান্ধব কর্মচারী হয়রানিমূলকভাবে চাকরিচ্যুত বা বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদের বরখাস্ত আদেশ বাতিল ও পূর্বের কর্মস্থলে পদায়ন নিশ্চিত করা।
৩. জরুরি সেবা ও লাইনক্রুদের কর্মঘণ্টা
- জরুরি সেবায় নিযুক্ত লাইনক্রুদের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা।
- শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে না পারা পাঁচজন লাইনক্রুকে আগের কর্মস্থলে পুনঃযোগদান নিশ্চিত করা।
৪. দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
- পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিত
পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের এই গণছুটি কর্মসূচি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতায়ন সেবা বন্ধ বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সরকারি ও বিদ্যুৎ বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে উপযুক্ত সমাধান ও আলোচনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।



