বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে একটি বড় হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছে। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল এবং সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
হামলার ধারাবাহিকতা: রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন,
“দেশকে অস্থিতিশীল করার নীলনকশার অংশ হিসেবেই সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় নেতৃবৃন্দের ওপর ধারাবাহিক হামলা চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাগপার (একাংশ) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে গুরুতরভাবে আহত করা হয়েছে। ববি হাজ্জাজের ওপর হামলাও সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা।”
তিনি আরও বলেন,
“জুলাই আন্দোলন-পরবর্তী বাংলাদেশে এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করার জন্য ফ্যাসিবাদের অবশিষ্ট শক্তির পাঁয়তারা চলছে। বিশেষ করে যখন দেশ নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন এই ধরনের হামলা জাতির জন্য অশনি সংকেত।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা নির্বাচনের পূর্বাভাস হিসেবে দেশজুড়ে আতঙ্ক তৈরি করছে এবং রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ বৃদ্ধি করছে।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিরাপত্তার আহ্বান
জামায়াতে ইসলামী তৎক্ষণাৎ সব জড়িতকে শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে দলটি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
“অবিলম্বে ববি হাজ্জাজসহ সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে,” বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সহিংসতা উস্কে দিয়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ জনগণ ও রাজনৈতিক দলের নেতারা নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
জামায়াতে ইসলামী মনে করছে, এই ধরনের হামলা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়; এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। দলটি সতর্ক করেছে যে, দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ আরও অস্থিতিশীল হতে পারে।
বিশ্লেষণ
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা এবং নেতৃবৃন্দের ওপর হামলার ঘটনা নির্বাচন পূর্ববর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারকে উভয় দিকের সহিংসতা রোধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে নাগরিক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।



