শুক্রবার, নভেম্বর ২১, ২০২৫
spot_img
Homeঅর্থনীতিবাংলাদেশে ১০–১৫টি ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ চিহ্নিত: শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান সাবেক গভর্নরের

বাংলাদেশে ১০–১৫টি ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ চিহ্নিত: শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান সাবেক গভর্নরের

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, রাজনৈতিক শক্তি ও অর্থনৈতিক শক্তির স্বার্থ এক হলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো অনেক কোম্পানি জন্ম নেয়। তিনি জানান, দেশে ইতিমধ্যে ১০–১৫টি এমন প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে মাসিক বিশ্লেষণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলম।

ফরাসউদ্দিন বলেন, শুধু সম্পদ জব্দ করলেই চলবে না, সেই সম্পদ সরকারের খাতায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর মতে, কুলাঙ্গারের সম্পদের কারণে নিরপরাধ পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা সঠিক নয়। এতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর আস্থা কমে যেতে পারে।

সাবেক গভর্নর আরও বলেন, দেশে গত সরকার আমলে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে, তবে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। বর্তমান সরকার সঠিক পথে রয়েছে। এখন কর আদায় বাড়ানো ও বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। ব্যাংকের পরিচালকরা যেন নীতিনির্ধারণে সীমাবদ্ধ থাকেন এবং ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ না করেন, সেই সুপারিশও করেন তিনি।

এ সময় পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান তাঁর প্রবন্ধে বলেন, দেশের অর্থনীতিকে তলানির দিকে ঠেলে দিয়েছিল এমন কিছু ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’। যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা ও দক্ষতা রক্ষা না হয়, নতুন করে এমন প্রতিষ্ঠানের জন্ম হতে পারে।

অন্য বক্তাদের মধ্যে মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, অর্থনীতি স্থিতিশীল হলেও প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে এবং মূল্যস্ফীতি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, অর্থ পাচার এখনো থামানো যায়নি, বরং বিদেশে স্থায়ী হওয়া প্রবাসীরা দেশ থেকে টাকা পাচার করছেন।

বিআইজিডির ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী বলেন, অর্থ পাচার বন্ধ ও অর্থনৈতিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রকৃত স্বাধীনতা দিতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যারা অর্থ পাচার করছে, তারা আমাদের সমাজের অংশ। রাষ্ট্র কেন এটিকে বন্ধ করতে পারছে না?’

অনুষ্ঠানে বক্তারা সর্বসম্মতভাবে বলেন, অর্থনৈতিক সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে দুর্নীতি দমন, কর আদায় বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা জোরদার করা জরুরি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments