বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম)-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খানের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম, গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ও পিএইচডি ডিগ্রিতে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে অভিযোগগুলো প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলেও তিনি এখনো পদে বহাল আছেন।
বিআরআইসিএম কর্তৃপক্ষ অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়। তবে হাইকোর্টে রিট করে তিনি পুনরায় দায়িত্বে ফিরে আসেন। আগামী ২৮ অক্টোবর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বিসিএসআইআরের মহাপরিচালক অনুপম বড়ুয়া বলেন, “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি মালা খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণিত পায়। তাই পরিচালনা বোর্ড তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আদালতের আদেশে তিনি এখনো দায়িত্বে রয়েছেন।”
এ বিষয়ে মালা খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়া এবং অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও মালা খান প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় ২০২২ সালে বিআরআইসিএমে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পান।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পদটির জন্য ১৪ বছরের প্রথম শ্রেণির গবেষণা অভিজ্ঞতা প্রয়োজন ছিল, কিন্তু মালা খানের অভিজ্ঞতা ছিল মাত্র আট বছর সাত মাস। তবুও প্রভাব খাটিয়ে তার আবেদন গ্রহণ করা হয়।
তিনি যে পিএইচডি ডিগ্রির দাবি করেছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি’ থেকে পাওয়া বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) জানায়, প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদিত নয় এবং পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের এখতিয়ারও নেই। ফলে তার ডিগ্রিটি অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়।
তদন্তে আরও জানা গেছে, তার পিএইচডি থিসিসে অন্য প্রকল্পের গবেষণার ফলাফল ও বিদেশি রিপোর্টের অংশ হুবহু কপি করা হয়েছে। এছাড়া তিনি বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থেকে কোটি টাকার অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগেও অভিযুক্ত হন।
বর্তমানে আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে তিনি দায়িত্বে বহাল আছেন। আগামী ২৮ অক্টোবর আপিল বিভাগের শুনানির পর জানা যাবে, তার ভবিষ্যৎ পদে থাকা না থাকার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।



