শ্রমিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমীরের বক্তব্য
ঢাকা, ১০ অক্টোবর ২০২৫:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, “শ্রমিকবান্ধব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। বর্তমানে দেশে ইসলামকে ক্ষমতায় আনার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে— সেই সুযোগ কাজে লাগাতে PR (Proportional Representation) পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবি।”
আজ (শুক্রবার) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সুষ্ঠু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই PR পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে হবে। বর্তমান সংখ্যাগরিষ্ঠতাভিত্তিক (First Past The Post) নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনগণের প্রকৃত মতামত সংসদে প্রতিফলিত হয় না। এতে জাতীয় রাজনীতিতে বৈষম্য, অস্থিরতা ও অন্যায় প্রভাব সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরাও তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকে, আর মালিকরা আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়।”
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, “জনগণের ভোটের অনুপাতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসন বণ্টনই গণতান্ত্রিক ও ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা। এতে ভোটের মূল্য সংরক্ষিত থাকবে, ছোট ও নতুন রাজনৈতিক দলগুলোও প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পাবে এবং জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।”
তিনি আরও বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই PR পদ্ধতির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এখন সময় এসেছে এই দাবিকে জাতীয় ঐক্যের প্ল্যাটফর্মে রূপ দেওয়ার। নির্বাচনী সংস্কারের অংশ হিসেবে অবিলম্বে PR পদ্ধতি প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক, প্রতিনিধিত্বশীল, শান্তিপূর্ণ ও শ্রমিকবান্ধব রাজনৈতিক সংস্কৃতি চাই। সেই পথের একমাত্র সমাধান হলো PR ভিত্তিক নির্বাচন।”
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই)। তিনি বলেন, “ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন ছাড়া শ্রমিকদের অধিকার কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চায় যেখানে মানুষ ও কুকুর খাদ্যের জন্য লড়াই করবে না, মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব থাকবে না, সবাই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি হাফেজ সিদ্দিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল কে. এম. বিল্লাল হোসাইন, যুগ্ম সেক্রেটারি জেনারেল এইচ. এম. রফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।



