যুক্তরাষ্ট্রের রাইট স্টেট ইউনিভার্সিটির মার্কেটিং অ্যানালিটিকস অ্যান্ড ইনসাইটস বিভাগে স্নাতকোত্তর করছেন বাংলাদেশের তরুণ সুদীপ্ত আচার্য। কুমিল্লায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই মেধাবী তরুণ সম্প্রতি উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্ল্যাটফর্ম জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে। এটি তার জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
স্বপ্নের অধিবেশনে উপস্থিতি
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই অধিবেশনে বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা আন্তর্জাতিক শান্তি, টেকসই উন্নয়ন, মানবাধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ নানা বৈশ্বিক ইস্যুতে মতামত তুলে ধরেন।
সুদীপ্ত আচার্য বলেন, “ছোটবেলা থেকেই জাতিসংঘ সম্পর্কে জানার আগ্রহ ছিল। ক্লাস ফোরে পরিবেশ পরিচিতি বইয়ে জাতিসংঘ সম্পর্কে পড়ার পর থেকে স্বপ্ন দেখতাম, একদিন সদর দপ্তরে গিয়ে বিশ্বনেতাদের আলোচনা নিজের চোখে দেখব। আজ সেটি সত্যি হয়েছে।”
‘ইউথ ফলো’ হিসেবে সুযোগ
সুদীপ্ত যুক্তরাষ্ট্রে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি তরুণ নেতৃত্বমূলক কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার কারণে ‘ইউথ ফলো’ হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের আমন্ত্রণ পান। তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ এবং কুমিল্লা অনলাইন প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সমাজ উন্নয়নমূলক কাজের এই অভিজ্ঞতাই তাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ এনে দিয়েছে।
অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া
জাতিসংঘের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আবেদনপত্র, জীবনবৃত্তান্ত, সুপারিশপত্র, পাসপোর্টের কপি, নেতৃত্ব বা সামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ এবং সংক্ষিপ্ত উদ্দেশ্য বিবৃতি (এসওপি) জমা দিতে হয়। শিক্ষা, সামাজিক অবদান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা যাচাই করে জাতিসংঘ সেক্রেটারিয়েট অনুমোদন প্রদান করে। এই অনুমোদন ভবিষ্যতে ভিসা আবেদন বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক কার্যক্রমেও সহায়ক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা
সুদীপ্ত বর্তমানে রাইট স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ছেন। তিনি বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের সময় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু কঠোর নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে অনেকে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছে। যেকোনো লিগ্যাল বা ইমিগ্রেশন ইস্যুতে তারা পেশাদারভাবে সহায়তা করে।”
ভবিষ্যৎ ভাবনা
সুদীপ্ত আচার্য গবেষণা ও বিশ্লেষণভিত্তিক মার্কেটিং ক্যারিয়ারে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চান। পাশাপাশি তরুণ নেতৃত্ব ও সামাজিক উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন, “যদি তরুণ প্রজন্ম আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া ও নীতিনির্ধারণে অংশ নিতে শেখে, তাহলে একদিন আমরা সত্যিই বৈশ্বিক পরিবর্তনের অংশ হতে পারব।”



