জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মতো বিপুলসংখ্যক ভোটধারী দলকে যদি নির্বাচনী প্রক্রিয়া, ভোট বা সংস্কারের বাইরে রাখা হয়, তবে ভবিষ্যতে দেশে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটতে পারে। গতকাল শনিবার বিকেলে রংপুরে জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়ে কর্মী সমাবেশের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী তাঁর সতর্কবার্তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখা গেছে যে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টি, জাসদ, আওয়ামী লীগ—এরা সম্মিলিতভাবে ৫০ ভাগ বা কমবেশি ভোট পেয়েছে। তিনি বলেন, এই বিপুলসংখ্যক লোককে যদি প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়, তবে ভবিতব্য গৃহযুদ্ধকে ঠেকানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত খুব দ্রুত সকল দলের সঙ্গে জাতীয় সংলাপ (ন্যাশনাল ডায়ালগ) শুরু করা। জাপা মহাসচিব মনে করেন, এই জাতীয় সংলাপের মাধ্যমেই জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হবে। তিনি আরও সতর্ক করেন যে, এটি ছাড়া দেশ একটি দীর্ঘমেয়াদি দ্বন্দ্বের ফাঁদে পড়ে যাবে।
ঐকমত্য কমিশনের সমালোচনা করে জাপা মহাসচিব বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সকলের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ছিলেন। আজকে কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। প্রতারক, প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। আমরা তো এই ঐকমত্য চাইনি।” তিনি বলেন, গত বছর যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে, তারা একটি ঐকমত্যের বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছে, কোনো ‘বাদ দেওয়ার বাংলাদেশ’ গড়তে চায়নি।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী হুঁশিয়ারি দেন যে, একটি বাদ দেওয়ার বাংলাদেশে আবার গণ-অভ্যুত্থান হবে, বিপ্লব হবে, আন্দোলন হবে এবং দেশের অর্থনীতি আস্তে আস্তে ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর ফলে বাংলাদেশ একটি স্যাটেলাইট কান্ট্রি হয়ে যেতে পারে, যেখানে কোনো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ বা শাসনব্যবস্থা থাকবে না এবং বিভিন্ন জায়গায় মাৎসন্যায় চলবে। তাঁর মতে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলমান আন্দোলন ও জনদুর্ভোগ ইতিমধ্যে এই অবস্থার কিছু নিদর্শন দেখাচ্ছে। জাপা মহাসচিব আরও জানান, তাঁর দল জাতীয় পার্টি খুব দ্রুত দেশের মুক্তির চেতনা ও নতুন বাংলাদেশ গড়ার দিকনির্দেশনা নিয়ে দফাওয়ারি প্রস্তাব নিয়ে আসবে।



