চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সম্প্রতি প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও ধারাবাহিক গুলির ঘটনা বৃদ্ধির পর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ সব টহল ও থানা ইউনিটকে সাবমেশিনগান (এসএমজি) ‘ব্রাশফায়ার’ মোডে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে কমিশনারের ওয়ারলেস বার্তা অনুযায়ী এই নির্দেশনা সিএমপি সদস্যদের জানানো হয়।
কমিশনারের বার্তায় বলা হয়, “এটি নিরস্ত্র জনসাধারণের বিরুদ্ধে না—যার হাতে অস্ত্র নেই, তার ওপর তো আর এসএমজি ব্যবহার করা হবে না। কিন্তু যারা প্রকাশ্যে জনসম্মুখে মানুষ হত্যা করছে বা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, তাদের প্রতিহত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অধিকর্তারা জানান, নগরে প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ড ও সশস্ত্র তৎপরতা রোধে টহল টিমগুলোকে এসএমজি ছাড়াও শটগান, দুইটি গ্যাস গান এবং টিম ইনচার্জদের নাইন মিমি পিস্তল বহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী চেকপোস্টের সংখ্যা সাত থেকে বাড়িয়ে ১৩টি করা হবে এবং পাহাড়ি এলাকা থেকে নগরের মধ্যে অস্ত্র ও সামগ্রী আনা ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, গত ৫ নভেম্বর বায়েজিদ-চালিতাতলী এলাকায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগ সভায় গুলিতে তালিকাভুক্ত সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন ও এরশাদ উল্লাহ আহত হন। সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে—এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ জনমনে উদ্বেগ বাড়ায় এবং সিএমপি এই নতুন নির্দেশনা জারি করেছে।
এক সহকারী কমিশনার (বন্দর জোন) নাম প্রকাশ না করে বলেন, “কমিশনার স্যারের এই হুঁশিয়ারি আমাদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা জাগিয়েছে। আইনি জটিলতায় আগে আমরা অনেক সময় দ্বিধায় থাকতাম, এখন সবকিছুতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেওয়ার নির্দেশ।”
অপরদিকে কয়টয়ালি থানার এক পরিদর্শক বলেন, “এসএমজি রেসপন্স মোড মানে বেপরোয়া গুলি নয়; এটি তাত্ক্ষণিক প্রতিরোধের সাহস দেয় যাতে অপরাধীরা শহরে অনায়াসে প্রবেশ করতে না পারে।”
সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ সংবাদে উদ্ধৃত হয়ে বলেছেন, “আমরা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি করে মেরে ফেলব—তারা যেন স্বপ্নেও এটা কল্পনা করতে না পারে।” কমিশনার বার্তায় উল্লেখ করেছেন, আইনগত প্রতিবন্ধকতা থাকলেও আত্মরক্ষার অধিকার (দণ্ডবিধির ধারার আওতায়) জমা রাখা হয়েছে এবং সব নিয়ত দায় তিনি নিজে বহন করবেন।



