ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ইতোমধ্যে ২৩৭ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। তবে এখনো ৬৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা বাকি রয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, চলতি নভেম্বর মাসেই এই বাকি আসনগুলোতে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। কারণ হিসেবে নেতারা বলছেন—কিছু আসন যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের জন্য ছাড়ার সম্ভাবনা আছে, আর কিছু আসনে রয়েছে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী, তাই সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগছে।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই সব প্রার্থী তালিকা, মিত্রদের সঙ্গে আসন সমঝোতা এবং প্রচারণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে চায় দলটি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্যকেও তারা নির্বাচনী পরিবেশের জন্য ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখছেন।
এদিকে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর অসন্তোষ বাড়ছে। তাদের অভিযোগ—বিএনপি নিজ দলের অধিকাংশ প্রার্থী ঘোষণা করলেও শরিকদের আসনে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি। ফলে তারা নির্বাচনি এলাকায় প্রচারে নেমে পড়লে বিভ্রান্তি বা উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে মিত্রদের আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিয়মিত গণসংযোগ ও শোডাউন করায় পরিস্থিতি অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে।
বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেছেন, গ্রিন সিগন্যাল পাওয়া সত্ত্বেও তালিকা ঘোষণা না হওয়ায় তাদের প্রতিদিন বিব্রত হতে হচ্ছে। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক অভিযোগ করেন, বিএনপি সমঝোতায় দেরি করছে, ফলে মিত্রদের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। প্রয়োজন হলে গণতন্ত্র মঞ্চকে বিকল্প ভাবনার দিকেও যেতে হতে পারে বলেও জানান তিনি।
এদিকে মনোনয়ন ঘোষণার পর ২৩টির মতো আসনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের বিক্ষোভ দেখা গেছে। এসব আসনে পুনর্মূল্যায়নের কাজ চলছে। নিরপেক্ষ যাচাই-বাছাইয়ের পর কয়েকটি আসনে পরিবর্তন আসতে পারে বলে দলীয় নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, চলতি মাসের মধ্যেই সব আসনে মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হবে। শরিকদের সঙ্গে আলোচনাও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা আশা করছেন, সব বিরোধ মিটে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করবেন।



