বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫
spot_img
Homeসর্বশেষআওয়ামী লীগ নেতাদের বাধায় খুলনায় দাফন হয়নি আল্লামা সাঈদীর

আওয়ামী লীগ নেতাদের বাধায় খুলনায় দাফন হয়নি আল্লামা সাঈদীর

খুলনার বসুপাড়ায় নিজ হাতে গড়ে তোলা দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে নিজের ও স্ত্রীর দাফনের জন্য অছিয়ত করেছিলেন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। মসজিদের কাছ থেকে আগে থেকেই দুটি কবরের জায়গাও কিনে রাখা ছিল। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সশস্ত্র বাধার কারণে সেই অছিয়ত পূরণ হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাকে নিজ জেলা পিরোজপুরে দাফন করা হয়। ফলে ১৪ আগস্ট এলে খুলনার সাঈদীভক্তরা এখনও গভীর বেদনায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন।

২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন জনপ্রিয় এই ইসলামি বক্তা ও রাজনীতিক। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিনি আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। মৃত্যুর পর মাদরাসা পরিচালনা কমিটি বৈঠক ডেকে লাশ মাদরাসায় আনা ও অছিয়ত অনুযায়ী দাফনের বিষয়ে আলোচনা করে।

মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জানান, সেদিন এশার নামাজ চলাকালীন মৃত্যুর খবর ঘোষণা দেওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা মিছিল ও স্লোগানসহ মাদরাসার সামনে জড়ো হন। উত্তেজিত জনতার হাতে অস্ত্র, হকিস্টিক, রামদা ও চাপাতি ছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে মাদরাসার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী আতঙ্কে ভবনের উপরের তলা ও ছাদে আশ্রয় নেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পুলিশ পুরো রাত পাহারায় ছিল।

তৎকালীন সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক তসলিম আহমেদ আশা, মহানগর যুবলীগ সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশসহ কয়েকশ নেতা-কর্মী ওই মিছিলে অংশ নেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, কারও হাতে ছিল পিস্তল, কারও কাছে শটগান।

স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাফিজুর রহমান মনি জানান, বসুপাড়াবাসী সেদিন এক ভয়াবহ রাত পার করেছে। শত শত সশস্ত্র ব্যক্তির আচরণ ও হুমকিতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় তার কাউন্সিলর অফিসও ভাঙচুর করা হয়।

শামীম বিন সাঈদী, দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া মাদানিয়া ট্রাস্টের বর্তমান চেয়ারম্যান, জানান সরকার চায়নি বিভাগীয় শহর খুলনায় তার পিতার দাফন হোক, যাতে মানুষের ব্যাপক সমাগম না ঘটে এবং তাকে স্মরণ করার ধারা দীর্ঘস্থায়ী না হয়। কবরের জায়গা এখনও অব্যবহৃত আছে; ভবিষ্যতে ভালো কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সম্ভবত সেখানে একটি স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments