মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার পদদলিত করে দেশে আর কোনো শাসক টিকে থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, মানবাধিকার শুধু মানুষের জীবনের নিরাপত্তাজনিত অধিকারই নয়, বরং শিক্ষা, চিকিৎসা, বাক স্বাধীনতা, বিচার পাওয়া, জীবনধারণ, বৈষম্যহীন সমাজও মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত।
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো শুধু মাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেই তাদের দায়িত্ব পূর্ণ করে। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠন না হওয়া দুঃখজনক।শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটি-বিসিআরএসের সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সোসাইটির ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত সময়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক’ অনুষ্ঠানে, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, হুইলচেয়ার ও অসহায় নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
এম আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্র-জনতা বুক চিতিয়ে জীবন ও রক্ত দিতে শিখেছে, স্বৈরাচারী আচরণ করলেই তার পতন অনিবার্য। ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে তাদের এটি মাথায় রাখতে হবে।
সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, একাত্তরে মুক্তির লড়াই করেছি, এখনো করছি। বাংলাদেশে মানবাধিকারের যে আইন রয়েছে সেটি প্রয়োগ এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। গত এক বছরে মানুষের আশা হতাশায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার সবার বেলায় প্রয়োগ করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, সরকারগুলো অস্থায়ী, রাষ্ট্রই একমাত্র স্থায়ী। রাষ্ট্রই পারে বাংলাদেশের নাগরিক অধিকারকে স্থায়িত্ব দিতে এবং সেটাকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে। এখন রাষ্ট্র কীভাবে পারবে? রাষ্ট্রের যে অঙ্গগুলো রয়েছে—আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ—এই তিনটি মূল অনুষঙ্গের মধ্যে যদি আন্তঃসংযোগ না থাকে, ইন্টার-কমিউনিকেশন না থাকে, তাহলে রাষ্ট্রের পক্ষে সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এই তিনটিকে সমন্বিতভাবে একটি জায়গায় এনে, তাদের মধ্য থেকে উৎসারিত চিন্তা এবং সেই চিন্তার ভিত্তিতে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে মানবাধিকারকে দীর্ঘমেয়াদি করার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।
সোসাইটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ তোশারফ আলী, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক জাফর ইমাম সিকদার, জাতীয় ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন মোল্লা, গ্লোবাল হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান এমএ কাদের। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক কামরুল হাসান দর্পণ।