বাংলাদেশের বেসরকারি জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড তুরস্কে সাড়ে পাঁচ হাজার ডেডওয়েট টনের (ডিডব্লিউটি) অত্যাধুনিক বহুমুখী জাহাজ ‘ওয়েস ওয়্যার’ রপ্তানি করতে যাচ্ছে।
শনিবার নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ও আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড স্লিপওয়েজ লিমিটেডের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মেঘনা ঘাটে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ঘাট থেকে জাহাজটি তুরস্কের ‘নোপ্যাক শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং লিমিটেড’-এর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম. সাখাওয়াত হোসেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রমিজ সেন।
জাহাজটি উন্নত নকশা ও আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিতে তৈরি। দৈর্ঘ্য ৩৪১ ফুট, প্রস্থ ৫৫ ফুট, গভীরতা ২৫ ফুট এবং ২,৭৩৫ হর্সপাওয়ার ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। এটি প্রতি ঘণ্টায় ১২ নট গতিতে ৫,৫০০ টন পণ্য বহন করতে সক্ষম। ইস্পাতের কয়েল, কয়লা, সার, খাদ্যশস্য ও রাসায়নিক পদার্থ পরিবহনের জন্য উপযুক্ত।
আনন্দ শিপইয়ার্ড সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ৩৫০টিরও বেশি জাহাজ সরবরাহ করেছে। ২০০৮ সালে ডেনমার্কে প্রথম রপ্তানি ‘স্টেলা মেরিস’ জাহাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের জাহাজ শিল্প স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার পাশাপাশি রাসায়নিক কারখানার কাঁচামাল সরবরাহের মাধ্যমে বার্ষিক ২ বিলিয়ন ডলার আয় সম্ভব। এছাড়া দেশের ঔষধ শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব।
প্রতিষ্ঠানটির কারিগরি পরিচালক ড. নাজমা নওরোজ জানান, নির্মাণকাজ শেষে সকল মেশিনারি টেস্ট ও সি ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। ক্রেতার নিকট জাহাজ হস্তান্তরের জন্য অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছে।
আনন্দ শিপইয়ার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণে উদীয়মান জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে। দেশে থেকে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের জাহাজ যেমন কার্গো, যাত্রীবাহী, মাল্টিপারপাস আইস-ক্লাস, ল্যান্ডিং ক্রাফ্ট, অফশোর প্যাট্রল ভেসেল, টাগবোট, মাছ ধরার জাহাজ, বাল্ক ক্যারিয়ার ও কনটেইনার ক্যারিয়ার রপ্তানি করা হয়েছে।



