স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার শাসনচক্র শেষ হওয়ার পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর জন্য পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়।
ফাউন্ডেশনটি ৮১৯ শহীদ পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ৪০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সহায়তা প্রদান করেছে। আহত ৫,৯৪৪ জুলাইযোদ্ধাকে ৭১ কোটি ২০ লাখ টাকার চিকিৎসা ও সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পুনর্বাসন কার্যক্রমে গরু, ক্ষুদ্র ব্যবসার পুঁজি, অটোরিকশা প্রদানের পাশাপাশি শিক্ষাগত ও প্রশিক্ষণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া চক্ষু হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিৎসা সহায়তা বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন মিলিয়ে মোট ৪৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ করেছে। প্রতিটি শহীদ পরিবারকে ২০ হাজার টাকা ভাতা, এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের শ্রেণিভিত্তিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। ৭৮ জুলাইযোদ্ধাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে।
তবে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা সরকারি কার্যক্রমকে অপ্রতুল মনে করছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, বিচার কার্যক্রম ধীরগতি এবং চিকিৎসাসেবা অপ্রতুল। জুলাইযোদ্ধা রাইসুর রহমান রাতুল বলেন, “প্রথম দিন থেকেই যদি আমরা সঠিক চিকিৎসা পেতাম, এতদিন পরে আমাদের এই অবস্থা হতো না।”
জুলাই গণহত্যার বিচার:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছে। এর মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনকে আসামি করে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। চারটি মামলায় ৪৫০টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ফাউন্ডেশনের সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর বলেন, “সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা সন্তোষজনক, তবে ভবিষ্যতে সব মন্ত্রণালয় যদি পুনর্বাসনে এগিয়ে আসে এবং চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে, তবে তা আরও ভালো হবে।”



