শুক্রবার, নভেম্বর ২১, ২০২৫
spot_img
Homeসারাদেশমহেশপুরে অভাবের চাপে মা বিক্রি করলেন নবজাতক, টাকা এখনো হাতে পাননি পরিবার

মহেশপুরে অভাবের চাপে মা বিক্রি করলেন নবজাতক, টাকা এখনো হাতে পাননি পরিবার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় অভাব-অনটনের কারণে এক অসহায় মা মাত্র ৬৫ হাজার টাকায় নিজের নবজাতক ছেলে বিক্রি করেছেন। বুধবার সকালে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের জললুলি গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। তবে বিক্রির টাকা এখনো ভুক্তভোগী পরিবারের হাতে পৌঁছায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জললুলি গ্রামের খলিলের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের সঙ্গে একই গ্রামের ছাত্তারের ছেলে আলামিনের বিয়ে হয়েছিল। তাদের সংসারে ইতিমধ্যেই একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। কিন্তু তৃতীয় সন্তানের জন্মের আগে আলামিন কৃষিকাজের সময় স্ট্রোকে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবারটি চরম অভাবের মধ্যে পড়ে।

৩০ সেপ্টেম্বর প্রসব বেদনা শুরু হলে সুমাইয়াকে মহেশপুরের পিয়ারলেস হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি ফুটফুটে নবজাতক ছেলে জন্ম নেয়। কিন্তু সিজারের খরচ ও দেনাদারদের চাপ সামলাতে না পেরে সুমাইয়া হাসপাতালের সহযোগিতায় নবজাতককে কুমিল্লার এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন হাসপাতালের আয়া ইসমোতারা খাতুন, যার কাছেই বিক্রির টাকাটি রয়েছে।

ঘটনা জানাজানি হলে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা খাতুনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে কাগজপত্রবিহীনভাবে পরিচালিত হওয়ায় পিয়ারলেস হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়। হাসপাতালের মালিক সেলিম রেজা বাবুকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং আয়া ইসমোতারা খাতুনকে নিয়মিত মামলায় জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নবজাতক উদ্ধারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহেশপুর থানার ওসিকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা খাতুন জানান, “আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। ক্লিনিক সিলগালা, জরিমানা ও মামলা করা হয়েছে। নবজাতক বিক্রির টাকা আয়ার কাছেই রয়েছে। প্রশাসনের মাধ্যমে সেটি উদ্ধার করে ভুক্তভোগী পরিবারের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।”

এদিকে টাকা এখনো না পাওয়ায় পরিবারে হতাশার পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের মাধ্যমে দ্রুত টাকা ভুক্তভোগীর হাতে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তীব্র সমালোচনা ও আলোচনা চলছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments