রাষ্ট্রদূত পদে প্রেষণে থাকা মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হককে প্রত্যাহার করেছে সরকার। সোমবার (৬ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁর নিয়োগ প্রত্যাহারের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রেষণে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োজিত মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হকের চাকরি এখন থেকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ন্যস্ত করা হলো। অর্থাৎ, তিনি পূর্বের মতোই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের আওতায় ফিরে যাবেন।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মেজর জেনারেল আমিনুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের আপন ছোট ভাই। সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর তাঁকে সম্প্রতি রাষ্ট্রদূত পদে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়।
তবে জুলাই-আগস্টে বিএনপি ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের আন্দোলনের সময় তিনি আনসার ও ভিডিপি বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আনসার সদস্যদের গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। আন্দোলনকারীদের একাংশ দাবি করে, ওই নির্দেশের সঙ্গে তৎকালীন ডিজি আমিনুল হক জড়িত ছিলেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রশাসনিক সূত্র বলছে, চলমান তদন্ত ও প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের অংশ হিসেবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে তাঁকে রাষ্ট্রদূত পদ থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
সাধারণত রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের প্রেষণকাল নির্দিষ্ট মেয়াদে থাকে। তবে প্রয়োজনবোধে সরকার সেই প্রেষণ আগেই প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারে।
প্রসঙ্গত, মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক পেশাগত জীবনে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন সামরিক প্রশাসন, প্রশিক্ষণ ও বাহিনী পরিচালনায় অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
সরকারি মহলে এই প্রত্যাহারকে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হলেও, রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রত্যাহারকে অনেকেই “নীতিগত পদক্ষেপ” হিসেবে বিবেচনা করছেন।
তবে এই বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কিংবা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।



