মাত্র ১১ বছরের চাকরি জীবনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একজন কর্মচারী গড়ে তুলেছেন অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ। ফরিদপুরের বাসিন্দা সৌরভ কুমার সাহা বর্তমানে বরিশাল অফিসে বিআরটিএর পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। তার নামে ও পরিবারের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের খোঁজ মিলেছে।
সৌরভ কুমার সাহা ২০১৪ সালে বিআরটিএতে মেকানিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে যোগ দেন। এর আগে তার পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তার আর্থিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন ঘটে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি জমি, বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসার মালিক হন।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, সৌরভের নামে ও বেনামে ১০টির বেশি বাস, ৪টি প্রাইভেট কার, একাধিক সিএনজি, জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফরিদপুর, বরিশাল ও খুলনাসহ কয়েকটি জেলায় তার সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। বরিশাল শহরেও তার একটি বিলাসবহুল বাসা রয়েছে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও যানবাহন রেজিস্ট্রেশনের বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও ঘুষের মাধ্যমে সৌরভ বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের অভিযোগে গত জানুয়ারিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে মামলা করে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সৌরভ কেন্দ্রীয় অনুমোদন ছাড়াই ১৯১টি সিএনজি রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং প্রতিটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য ঘুষ নিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা করে। তার সঙ্গে বিআরটিএর আরও কয়েকজন কর্মকর্তা ও একটি বেসরকারি গাড়ি কোম্পানির কর্মকর্তা এই মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন।
দুদকের মামলায় গ্রেপ্তারের পর সৌরভ কুমার সাহা জামিনে মুক্ত আছেন। তবে কীভাবে এত দ্রুত জামিন পেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে সৌরভ কুমার সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমার নামে কোনো ব্যবসা বা গাড়ি নেই। আমার বাবার একটি রেন্ট-এ-কার ব্যবসা আছে, আমি শুধু সরকারি চাকরি করি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সৌরভের বিলাসবহুল জীবনযাপন, দামি গাড়ি ও ক্রমবর্ধমান সম্পদের কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।



