পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটায় মঙ্গলবার রাতে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর। হামলা সারিয়াব এলাকার শাহওয়ানি স্টেডিয়ামের কাছে ঘটেছে। এই সময় বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির জনসভা শেষে জনসমাগম ছত্রভঙ্গ হয়ে পার্কিং এলাকায় ফিরছিল।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জনসভা থেকে বেরিয়ে আসার সময় পার্কিং এলাকায় আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটান। এ ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনী, বেসামরিক নাগরিক এবং স্থানীয় কমিটির সদস্যরা আহত হয়েছেন।
বেলুচিস্তান প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সারফরাজ বুগতি হামলাকে এক কাপুরুষোচিত ও নিন্দনীয় কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, “যে বা যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, তারা মানবতার শত্রু। তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। আমরা তাদের ঘৃণ্য পরিকল্পনা ধ্বংস করব।”
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, হামলার সঙ্গে কোনো ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে। বিশেষত, সুন্নি ইসলামপন্থি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), যা পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় প্রধান জঙ্গি গোষ্ঠী, এর সাথে জড়িত থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০০৭ সাল থেকে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানি রাষ্ট্রকে উৎখাত করে কঠোর ইসলামি আইন প্রণয়নের লক্ষ্য নিয়ে সক্রিয়ভাবে লড়াই করে আসছে।
ইসলামাবাদ ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ, প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জুন মাসে পাকিস্তানে ৭৮টি সন্ত্রাসী হামলা সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫৩ জন নিরাপত্তা কর্মী, ৩৯ জন বেসামরিক নাগরিক, ছয়জন জঙ্গি এবং স্থানীয় শান্তি কমিটির দুই সদস্য রয়েছেন। আহত হয়েছেন মোট ১৮৯ জন, যার মধ্যে ১২৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ৬৩ জন বেসামরিক ব্যক্তি।
এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী তৎপরভাবে তদন্ত শুরু করেছে। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্থানীয় হাসপাতালে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।



