ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন মন্তব্য করেছেন, দেশ এখন একটা ‘সংকটময় অবস্থায়’ দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেছেন, দেশ কোন দিকে যাবে, গণতন্ত্রের পথে কীভাবে হাঁটবে—এই সবকিছুই নির্ভর করছে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ওপর। তার মতে, এই নির্বাচনের মাধ্যমেই বাংলাদেশের গতিপথ ঠিক হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এইসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কী বাংলাদেশ রেখে যাব, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাব, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাব কি না, কীভাবে রেখে যাব—সেই চিন্তা আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়।’ তিনি এই দায়িত্বকে ব্যক্তিগতভাবে কোনো রুটিন দায়িত্ব বা সাধারণ ‘চাকরি’ হিসেবে না নিয়ে বরং ‘মিশন’ হিসেবে নিয়েছেন, ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘এ ধরনের সংকটময় মুহূর্তে দেশ যখন রয়েছে—এখানে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে হবে না। দায়িত্বসীমার বাইরে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
তিনি মনে করেন, ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘সবাই মিলে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেব, যাতে দেশ এগিয়ে যায়, গণতন্ত্র এগিয়ে যায়।’
ভোটাধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্যোগ
নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ লোক যুক্ত থাকবে জানিয়ে সিইসি বলেন, এবার নির্বাচন কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে—
- যাঁরা ভোটের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁরাও যেন সবাই ভোট দিতে পারেন।
- আইনি হেফাজতে যাঁরা কারাগারে রয়েছেন, তাঁরাও যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
- এ ছাড়া প্রবাসীরা এবার ভোট দিতে পারবেন।
তিনি আনসার বাহিনীর সদস্যদের ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। তাদের প্রশিক্ষণকে ‘স্বস্তির’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাদের ওপরই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে।
ভুয়া তথ্য নিয়ে সতর্কতা
সিইসি আনসার সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু দেখলেই তা বিশ্বাস করবেন না, শেয়ার করবেন না। আগে সেই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করবেন। তথ্য সঠিক হলে তারপর তা শেয়ার করবেন।’ তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর বিষয়েও সতর্ক করেন এবং সবাইকে যাচাই-বাছাই করার আহ্বান জানান।
এ সময় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব জানান, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে এবং ইসির ম্যান্ডেট অনুযায়ী তার বাহিনী কাজ করবে।



