ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি প্রকাশ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ যে রায় ঘোষণা করেছে, সেটি আমাদের নজরে এসেছে।”
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, “ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ বজায় রাখার প্রতি ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত থাকব।”
এর আগে দুপুরে জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১।
একই মামলার তৃতীয় আসামি, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন রাজসাক্ষী হওয়ায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পান।
মামলার তিনজন আসামির মধ্যে শুধুমাত্র সাবেক আইজিপি মামুনই রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়।
রায়ের পরপরই বাংলাদেশ সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করে যেন প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় পলাতক দুই আসামিকে ফেরত পাঠানো হয়।
২০১৬ সালে সংশোধিত বাংলাদেশ–ভারত প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী “প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত” ব্যক্তিদের বিনিময় করা যেতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়—মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে তৃতীয় দেশে আশ্রয় দেওয়া “অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অশ্রদ্ধা” হিসেবে বিবেচিত হবে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, “ভারত সরকার যেন দ্রুত দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদিও রায় সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেছে, তবে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কোনো অবস্থান প্রকাশ করেনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনের পর ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকার এর আগে একাধিকবার তাঁকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করলেও ভারত সাড়া দেয়নি।



