দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে। কারণ, বদলি হওয়ার পরও দুই শতাধিক চিকিৎসক কর্মস্থলে যোগ দেননি। আবার যারা যোগ দিয়েছেন, তাদের অনেকে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন না। এতে স্বাস্থ্যসেবায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
যোগদান না করার কারণ
চিকিৎসকরা যোগদান না করার পেছনে উচ্চশিক্ষা, উন্নত কর্মপরিবেশের অভাব ও রাজনৈতিক প্রভাবকে দায়ী করছেন। কারও ক্ষেত্রে পছন্দমতো কর্মস্থল না পাওয়া, আবার কারও ক্ষেত্রে শিক্ষা ছুটি কিংবা অন্যত্র যুক্ত হওয়ার মতো কারণও রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বারবার নোটিস পাঠিয়েছে। অনেক চিকিৎসক নোটিস পেয়ে কাজে ফিরলেও অনেকে এখনো অনুপস্থিত। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জানিয়েছে, এটি হবে শেষ নোটিস। এবারও যোগ না দিলে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চিকিৎসকদের উদাহরণ
- ডা. নাজমুল আলম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মুগদা মেডিকেলে বদলি হলেও আট মাসেও যোগ দেননি।
- ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, কক্সবাজার ও হবিগঞ্জে বদলির পর যোগ দেননি। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক কারণে কর্মস্থলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে কর্মরত আছেন বলে দাবি করেন।
পরিসংখ্যান
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী:
- গত এক বছরে ৮,২৭৬ জন চিকিৎসক বদলি হয়েছেন
- এর মধ্যে ৮,০১৯ জন যোগ দিয়েছেন
- ২০০ জনের বেশি চিকিৎসক এখনো যোগ দেননি
- প্রায় ৫৭ জন অপেক্ষায় রয়েছেন
সরকারি নীতিমালা
সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী, বদলির প্রজ্ঞাপন জারির তিন দিনের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। চতুর্থ দিন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবে। নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এবিএম আবু হানিফ বলেন,
“শুরুর দিকে সমস্যাটা বেশি ছিল, এখন অনেকটা কমেছে। তবে এখনও অনেক চিকিৎসক কাজে যোগ দেননি বা দায়িত্ব পালন করছেন না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।”
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব সাইদুর রহমান জানান,
“গত ২৬ আগস্টও অনেক চিকিৎসককে নোটিস দেওয়া হয়েছে। এবারও যোগ না দিলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



