আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় জয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে সাংগঠনিক পুনর্গঠন ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমে দলটি নতুন করে রাজনৈতিক পরিসরে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, দলটি এখন কেবল নিজেদের ঐতিহ্যবাহী সমর্থক গোষ্ঠীতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং দেশের সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে জামায়াত একটি “অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রার্থী কাঠামো” গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। এতে বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট নাগরিকদের পাশাপাশি, যোগ্য অমুসলিম প্রার্থীদেরও মনোনয়নের আওতায় আনার চিন্তা করছে দলটি। পাশাপাশি ইসলামি ও সমমনাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা ও নির্বাচনি ঐক্য গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আমরা ইসলামি ও দেশপ্রেমিক বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐক্যের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছি। এতে আমরা আশাবাদী।”
তিনি আরও জানান, প্রার্থী বাছাইয়ে বৈচিত্র্য আনার পরিকল্পনা রয়েছে। “আমরা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা, আলেম— এমনকি যোগ্য অমুসলিম প্রার্থীকেও বিবেচনা করছি। লক্ষ্য একটাই—দক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য ও যোগ্য সংসদ গঠন।”
দলটি ইতোমধ্যে নির্বাচনি মাঠে জনসংযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছে। পাশাপাশি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ’ এবং ‘পিআর পদ্ধতি প্রবর্তন’সহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, ভোট পরিচালনায় সারা দেশে প্রশিক্ষিত নারী-পুরুষ পোলিং এজেন্ট প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেন ভোটকেন্দ্রে স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা বজায় থাকে।
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা চাই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। জনগণ যদি আমাদের পক্ষে রায় দেয়, আমরা দায়িত্বশীলভাবে দেশ পরিচালনা করতে প্রস্তুত।”
এদিকে জামায়াতের সঙ্গে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি ও জাগপার মতো সমমনাদের মধ্যে নির্বাচনি ঐক্যের আলোচনা এগিয়ে চলছে। এসব দল আসন সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসলামি দলগুলোর ঐক্য যদি সফল হয়, তবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে পুনরায় আত্মপ্রকাশ করতে পারে।



