আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে সাংগঠনিক ভিত শক্ত করতে তৎপর হয়ে উঠেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে এবং তৃণমূল পর্যায়ে সক্রিয়তা বাড়াতে এখন সব মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে তারা। এই লক্ষ্যেই একের পর এক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে।
দলটির কেন্দ্রীয় এক নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, “এই নির্বাচনে আমরা সর্বশক্তি দিয়েই লড়ব। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য আগামী নির্বাচন। এবারের ভোটকে আমরা সাংগঠনিক শক্তি গড়ার সুযোগ হিসেবে দেখছি।” তিনি আরও জানান, শহরাঞ্চলে এনসিপির উপস্থিতি থাকলেও গ্রামাঞ্চলে এখনো দুর্বলতা আছে। সেই ঘাটতি কাটিয়ে তোলার জন্য নির্বাচনী পরিবেশকে কাজে লাগাতে চায় দলটি।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতা-কর্মীদের জন্যও খোলা রেখেছে এনসিপির দরজা। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “বিএনপি ও জামায়াতে অনেক যোগ্য নেতা আছেন, যারা মনোনয়ন পাননি। তাঁরা সৎ ও যোগ্য হলে এনসিপি তাঁদের স্বাগত জানাবে।”
গত বৃহস্পতিবার থেকে এনসিপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। দলটির প্রত্যাশা—বঞ্চিত বা মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুগত কর্মীরা এনসিপিতে যোগ দিলে আঞ্চলিক পর্যায়ে দলের প্রভাব আরও বাড়বে।
তবে এনসিপি এককভাবে নাকি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। প্রার্থিতার বিষয়েও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।” আগামী ১৩ ও ১৪ নভেম্বর দলের নির্বাহী কাউন্সিলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই নির্বাচনী জোট ও প্রার্থী তালিকা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জামায়াত ও বিএনপি উভয় দলই এনসিপিকে সম্ভাব্য জোটসঙ্গী হিসেবে চাইছে। তবে এনসিপির একাংশ মনে করছে, এই মুহূর্তে জোটে না গিয়ে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে দলটির নিজস্ব পরিচিতি ও শক্তি বাড়বে। সেই সিদ্ধান্তই শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে কিনা, তা জানতে সবাই তাকিয়ে আছে নভেম্বরের কাউন্সিল বৈঠকের দিকে।



