যুক্তরাষ্ট্রে সরকারিভাবে শাটডাউন জারি থাকায় দেশজুড়ে উড়োজাহাজ চলাচলে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সরকারি কর্মী সংকটের কারণে গত শুক্রবার পর্যন্ত দেশজুড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং আরও কয়েক হাজার ফ্লাইট দেরিতে ছেড়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের রেগান বিমানবন্দরে গড়ে প্রতি ফ্লাইট ২৪০ মিনিট বা চার ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছাচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে একযোগে ফ্লাইট বাতিল বা দেরিতে ছাড়ার ঘটনা ঘটেছে।
সরকারি শাটডাউনের কারণে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক এবং নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে অনেকেই কর্মস্থলে উপস্থিত হতে পারছেন না। এ অবস্থায় বিমানবন্দরগুলোতে ভিড় ও বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহনমন্ত্রী সিন ডেফি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। তবে এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী সপ্তাহে ১০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিলের আশঙ্কা রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, শাটডাউন চলতে থাকলে ফ্লাইট সংখ্যা ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা হতে পারে।
ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো ও ওয়াশিংটন ডিসির মতো ব্যস্ত শহরের বিমানবন্দরগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি দেখা গেছে। সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে শত শত উড়োজাহাজ ঘণ্টার পর ঘণ্টা রানওয়েতে আটকে আছে।
এএফপির তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার থেকেই বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রকদের অনেককে জানানো হয়েছে যে, আগামী সপ্তাহেও তারা কোনো বেতন পাবেন না। এতে কর্মীদের অনুপস্থিতি আরও বেড়ে যাচ্ছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটওয়্যার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ৫ হাজার ৩০০টিরও বেশি ফ্লাইট দেরিতে ছেড়েছে। রেগান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল বিমানবন্দরে ১৭ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, আর ৪০ শতাংশ ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে।
আমেরিকান এয়ারলাইনস, সাউথওয়েস্ট ও ডেল্টা এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অসুবিধা কমাতে বিনা মূল্যে ফ্লাইট পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে টিকিটের অর্থ ফেরতের ঘোষণা দিয়েছে।
৩৮ দিন ধরে চলমান সরকারি শাটডাউনের কারণে বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার বিমান নিয়ন্ত্রক ও ৫০ হাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তা বেতন ছাড়াই কাজ করছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন ব্যবস্থা আরও বড় সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।



