ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হলেও ভোটকেন্দ্রের ১০০ গজের ভেতরে প্রার্থীরা অবৈধ প্রচারণা চালানোর কারণে নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। এতে ভোটাররা অশান্তি ও বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন।
সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিতে লাইনবদ্ধ হন। তবে উৎসবমুখর পরিবেশ দ্রুতই অশান্তিতে পরিণত হয়। প্রার্থীরা কেন্দ্রের প্রবেশপথে সরাসরি ভোট চাইতে গিয়ে লিফলেট ও প্রচার সামগ্রী বিতরণ করেন, যা নির্বাচন কমিশনের নিয়ম লঙ্ঘন।
সকাল ৯টা ৩০ মিনিট নাগাদ সিনেট ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, কার্জন হল ও উদয়ন স্কুলসহ কয়েকটি কেন্দ্রে এই দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা প্রবেশপথে ভিড় তৈরি করে শিক্ষার্থীদের প্রবেশে কৃত্রিম জট সৃষ্টি করেছেন।
প্রার্থী রাহাত সিকদার বলেন, “এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা একটি সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলাপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করি।”
অন্যদিকে ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল থেকে সহসভাপতি প্রার্থী আবদুল কাদের অভিযোগ করেন, “অনেকে টোকন দিয়ে ভোট চাচ্ছে, ফলে ভোটারদের সমস্যা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে জানানো সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কমিশন নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে।”
ভোটার রায়ান অভিযোগ করেছেন, “প্রার্থীরা ও তাদের সমর্থকরা কোনো নিয়ম মানছেন না। অনেকেই লিফলেট বিতরণের জন্য টেবিল পর্যন্ত বসিয়েছেন।”
হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অবহিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমেদ সতর্ক করেছেন, “প্রার্থীরা এভাবে ভোট চাইতে পারবেন না। কেন্দ্র থেকে কমপক্ষে ১০০ মিটার দূরে থাকতে হবে, তা না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বছরের নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২৮টি ডাকসু পদে ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং ১৮টি হল সংসদে ২৩৪টি পদের জন্য ১,০৩৫ জন প্রার্থী লড়ছেন।
একজন ভোটারের হাতে মোট ছয়টি ব্যালট থাকে—ডাকসুর জন্য পাঁচটি এবং হল সংসদের জন্য একটি। মোট ৪১টি ভোট প্রদান করতে হবে।
ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আটটি কেন্দ্রে চলবে। কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রগুলিতে প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।



